ভারতীয় রসুইঘরে একটি বহুল ব্যবহৃত এবং পরিচিত মশলার নাম জয়ত্রী। জয়ফল নামক এক প্রকার ফল থেকে এই গুঁড়া মশলা উৎপাদিত হয়ে থাকে। ভারতীয় রান্নায় এর ব্যবহার বেশি হলেও এর আদিভূমি মূলত ইন্দোনেশিয়ার মালাক্কা মসলা দ্বিপপুঞ্জের বান্ডা নামক স্থানে। জয়ফল এক ধরনের খোসাযুক্ত ফল যা থেকে একই সাথে লাভ করা যায় দুই প্রকারের মশলা। পরিণত বয়স্ক জয়ফল গাছ থেকে সংগ্রহ করার পর দীর্ঘ প্রায় দুইমাস ধরে শুকানো হয়। এর উপরের খোসা এবং বীজকে হাতের সাহায্যে আলাদা করে এক ধরনের লাল রঙের আঁশ বা খোসা পাওয়া যায়। এই সংগৃহীত খোসা থেকেই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয় জয়ত্রী গুঁড়া।
মিষ্টি জাতীয় খাবারে জয়ফল বা জয়ত্রী গুঁড়ার ব্যবহার অধিক লক্ষ্যনীয়। এটি খাবারে সুগন্ধ বর্ধনে অধিক উপযোগী হলেও খাবারে ভিন্ন একটি স্বাদ যোগ করতেও এই মশলার প্রয়োগ হয়ে থাকে। দুগ্ধজাতীয় খাবারে বিশেষ করে পায়েশ, কাস্টারড, পাই ইত্যাদি খাবারে সামান্য জয়ত্রী গুঁড়া অসামান্য সুগন্ধ এবং স্বাদ যুক্ত করে দেয়। বাইরের দেশগুলোতে কেক, ডোনাটাস, জেলি প্রভৃতি খাবারেও আপনি এই মশলার ব্যবহার দেখতে পাবেন। বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী হতে সাধারন গৃহিণী, সবার কাছেই তাই জয়ত্রী গুঁড়ার সমান কদর রয়েছে। আমাদের দেশে মাংস, বেকড ফুডস, পুডিং, বিরিয়ানী, রোস্ট প্রভৃতি রান্নাতে জয়ত্রী গুঁড়ার প্রয়োগ হয়। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই মশলার ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকে। ভারতীয় মুঘোলদের সব রান্নায় এর ব্যবহার অনিবার্য ছিল তাছাড়া বিভিন্ন ডাচ রান্না এমনকি আরবের রান্নাগুলোতেও স্বাদে পরিপূর্ণতা আনতে ব্যবহার করা হত জয়ত্রী গুঁড়া। ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই মশলা উৎপাদন, ব্যবহার এবং জনপ্রিয়তা দেখা যায়।
Reviews
There are no reviews yet.