আচার পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। বর্তমানে খাবারের একটা বিশেষ উপাদানে পরিণত হয়েছে আচার। তরকারী স্বাদ না হলেও কিন্তু পেটে খাবার ভরতে এর জুড়ি নেই। আমাদের দেশে বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরি হয়। আজকাল সব জায়গায় কিন্তু বরই পাওয়া যাচ্ছে। শুধু কাঁচা নয়, বরং শুকনো বরই দিয়েও বানিয়ে ফেলা যায় মজাদার বরই আচার।
খিচুড়ি বা ভর্তা ভাতের সাথে বরই-এর ঝাল-মিষ্টি আচার না হলে তৃপ্তি আসে না। আমাদের আচারটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি করা হয়। তাই আমাদের আচারটি স্বাদ ও মানে অনন্য।
বরই ফলের বহু গুণাগুন রয়েছে। কিন্তু ফলটি সুধু একটি নিদর্ষ্ট সময়েই পাওয়া যায়। বরইএর আচার বরই সংরক্ষণের একটি আদি উপায় বলা যায়। বরই এ যেসব গুণাগুণ পরিলক্ষিত হয়,বরই আচারেও সেসব গুণাগুন কমবেশি পাওয়া যায় । যেমনঃ
আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রজাতির বরইয়ে বিদ্যমান ভিটামিন সি গলার ইনফেকশন জনিত অসুখ যেমন-টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া রোধ করে।
যকৃতের কাজের ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় বরই।
বরই এর রস অ্যান্টি ক্যান্সার ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।এই ফলে রয়েছে ক্যানসার সেল, টিউমার সেল, লিউকোমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ শক্তি।
উচ্চরক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারি।রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া,রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া, ব্রঙ্কাইটিস-এসব অসুখ দ্রুত ভালো করে বরই। খাবারে রুচি আনার জন্যও এই ফলটি ভূমিকা পালন করে।
মৌসুমি জড়,সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রতিরোধ।
স্ট্রেস হরমোন আমাদের মনে অবসাদ আনে, দুঃখ-কষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, নিদ্রাহীনতা তৈরি করে। নিদ্রাহীনতা দূর করে এবং স্ট্রেস হরমোন নিসরনের মাত্রা কমায়।
সংরক্ষন :
*বৈয়ামের মুখ ঠিকঠাক মতো বন্ধ না করলে আচার পচে দুর্গন্ধ হয়।
* বৈয়ামগুলো সপ্তাহে একদিন পরীক্ষা করতে হবে। আচারে পচন ধরলে বৈয়াম ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
* নোংরা হাত বা আঙুলি দিয়ে আচার তুললে আচার নষ্ট হয়ে যায়।
* আচার তুলতে ভেজা চামচ ব্যবহার করলে তা নষ্ট হয়ে যায়।
* স্যাঁতসেঁতে ঘরে রাখলে জাম্প ধরে আচার নষ্ট হয়ে যায়। * আচার ঘরে ফেলে রাখা যাবে না, মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে।
* বৈয়ামে আচার ফুলে ওঠা, ছাতা পড়া, রঙ বদলে যাওয়া আচার দূষিত হওয়ার লক্ষণ বলে মনে করতে হবে। * চিনি, গুঁড়, লবণ, সিরকা, তেল ও মসলাকে সংরক্ষণের উপাদান বলে।
* মসলা মেশানোর ফলে জীবাণু সক্রিয় হতে পারে না। ফলে সংরক্ষিত আচার অনেকদিন ভালো থাকে।
* আচারে সিরকা মিশানো রয়েছে, এতে আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে।
* আচার ফ্রিজেও সংরক্ষণ করা যায়।
* আচার রোদে দিলে বৈয়ামের ঢাকনা খুলে দেবেন। বৈয়ামের মুখে পাতলা কাপড় বেঁধে দিলে আচারে ধুলাবালি পড়বে না।
* এ নিয়মগুলো মেনে চলুন, দেখবেন বছরের পর বছর আচার নষ্ট হবে না।
সতর্কতাঃ
*আচারে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে, যা ফানগাসের সম্ভাবনা দূর করে আচার সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আমরা সাধারণভাবেই জানি অতিরিক্ত লবণ এবং তেল সমৃদ্ধ খাদ্য আমাদের হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই হার্ট, কোলেস্ট্রল ও প্রেশারের রোগীদের আচারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
*খালি পেটে আচার খাওয়া যাবেনা।
Reviews
There are no reviews yet.