ব্যাখ্যামূলক তথ্য:
কাঠ বাদাম (বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia catappa) একটি বৃহদাকৃতির গাছের ফলের বিচি। বিচির নাম অনুযায়ী এই গাছকে কাঠ বাদামগাছ ডাকা হয়। এটি নিরক্ষীয় অঞ্চলে জন্মানো লেডউড জাতীয় Combretaceae পরিবারের একটি বৃক্ষ। এ গাছের রসালো ফলেরঅভ্যন্তরে ৩-৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ কয়েকটি বিচি থাকে যা পরিপক্ক ফল থেকে বের করে নিয়ে সরাসরি বা ভেজে খাওয়া হয়। এই বিচিগুলিইকাঠবাদাম নমে পরিচিত। বিচিগুলো বাদামের গন্ধ যুক্ত। কাঠ বাদাম সারা বিশ্বে ভারতীয় বাদাম নামেও পরিচিত।
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে আমরা সকলেই শুনে থাকি যে বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে, ফলে কোলেস্টেরল থাকলে বাদামনা খাওয়াই ভালো। কিন্তু আপনি কি জানেন যে কাঠ বাদাম আমাদের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে? ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বাএল.ডি.এল. লিপোপ্রোটিন আমাদের হৃদরোগের সম্ভাবনাকে বাড়ায়। রোজ আপনি যদি নিয়ম করে কাঠ বাদাম খান, তাহলে তা আপনারশরীরে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে এইচ.ডি.এল. বা ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়াতে সাহায্য করবে।
হৃদরোগের সম্ভাবনাকে কমায়
কাঠ বাদামে থাকা মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও পটাশিয়াম হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ওহৃদরোগের সম্ভাবনাকে কমায়। কাঠ বাদামের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে যা ভিটামিন ই-র সাথে ধমনীতে রক্ত চলাচলেসাহায্য করে ও প্রদাহকে কমায়। কাঠ বাদামে থাকা ফলিক অ্যাসিড রক্তবাহে ফ্যাট জমতে বাধা দেয় ফলে আমাদের হৃদরোগেরসম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
ডায়াবেটিস কমাতে
কাঠ বাদামের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কম, তাছাড়া কাঠ বাদামে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও অনেক কম থাকে। কাঠ বাদামে থাকা প্রচুরম্যাগনেশিয়াম আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ও ইনসুলিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে নিয়ম করে কাঠ বাদাম খাওয়াঅনেকসময় ডায়াবেটিসের ওষুধ খাবার থেকেও বেশী উপকার দেয়।
রক্তচাপ কমায়
কাঠ বাদামে থাকা পটাসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম আমাদের রক্তচাপকে কমায় এবং রক্তে সোডিয়ামের মাত্রাকে কমায়। এছাড়া রক্তচাপেরঅনিয়ন্ত্রিত ওঠানামাকে কাঠ বাদাম নিয়ন্ত্রণ করে। উচ্চ রক্তচাপ যেহেতু হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাকে বাড়ায় তাই নিয়ম করে কাঠ বাদামখেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ও হৃদরোগের সম্ভাবনাকে কমায়।
মস্তিষ্কের জন্যও কাঠ বাদাম উপকারী
কাঠ বাদামের মধ্যে প্রচুর খাদ্য পরিপোষক থাকে যা আমাদের মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনের জন্য বাচ্ছাদেরছোট থেকেই কাঠ বাদাম খাওয়ানো উপকারী। মস্তিষ্কের জন্য উপকারী দুটি প্রধান পরিপোষক রাইবোফ্ল্যাভিন ও এল-কারনিটাইন কাঠবাদামে থাকে যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে বাড়ায়। বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে ডায়েটে কাঠ বাদাম বা কাঠ বাদামের তেল যোগ করলেতা আমাদের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে ও স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ্য রাখে। এছাড়া কাঠ বাদাম অ্যালজাইমারের সম্ভাবনাকে কমায়।
বাড়তি ওজন কমাতে
কাঠ বাদামে ১০-১৫ শতাংশ ক্যালোরি থাকে যা আমাদের শরীর নিতে পারে না। এই বাড়তি ক্যালোরি মেটাবলিজমের হার বাড়ায়। কাঠবাদামে থাকা মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড খিদেকে নিয়ন্ত্রণ করে ও বাড়তি খাওয়া থেকে থেকে আটকায়। ফলে আপনার যদিমোটা হওয়ার ধাত থাকে, তাহলে নিয়ম করে গোটাকয়েক কাঠ বাদাম খেতে পারেন। দেখবেন ওজন আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকছে।
প্রেগন্যান্সিতে
কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকে যা শিশুর জন্মের সময় বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। এছাড়া কোষের বৃদ্ধি ওকোষের গঠনে সাহায্য করে। ডাক্তাররা গর্ভস্থ শিশুর ও মায়ের স্বাস্থ্যর জন্য নিয়ম করে ফলিক অ্যাসিড খাবার পরামর্শ দেন। তাইপ্রেগন্যান্ট মহিলাদের নিয়ম করে কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত।
হাড় ও দাঁত শক্ত রাখতে
কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে যা হাড়ের বিভিন্ন রোগ যেমন অষ্টিও-পোরোসিসের সম্ভাবনাকে কমায় ওহাড়কে শক্ত ও মজবুত করে। এছাড়া হাড় ও দাঁতের ক্ষয় রোধ করতেও কাঠ বাদাম নিয়ম করে খাওয়া উপকারী।
ত্বকের ও চুলের যত্নে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাঠ বাদাম খুবই উপকার দেয়। কাঠ বাদামে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-এজিং প্রপার্টি আমাদেরত্বকের বয়স কমাতে সাহায্য করে।
Reviews
There are no reviews yet.